ই-পেপার শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২

দুর্বলের অধিকার আদায়ে রাসুল (স.)-এর ৮ অভূতপূর্ব পদক্ষেপ

আমার বার্তা অনলাইন
১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:২৩

মক্কার পথে-প্রান্তরে যখন শক্তিশালীদের অত্যাচারে নিপীড়িত হচ্ছিল দুর্বলরা; নারী, দাস, এতিম ও গরিবেরা বঞ্চিত হচ্ছিল তাদের মৌলিক অধিকার থেকে, তখনই উদ্ভাসিত হলেন মানবতার আলোকবর্তিকা, মুহাম্মাদ (স.)। নবুয়তের আগেই তিনি পরিচিত ছিলেন ‘আল-আমিন’ বিশ্বাসযোগ্য, ন্যায়পরায়ণ ও দুর্বলের আশ্রয়দাতা হিসেবে। নবুয়তের পর তিনি হয়ে ওঠেন সমগ্র মানবতার জন্য রহমত। তাঁর জীবনই দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক বাস্তব সংবিধান।

১. হিলফুল ফুজুল: ন্যায়ের জন্য ঐক্য

নবুয়তের আগে মক্কার সমাজে এক বিদেশি ব্যবসায়ীকে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ঠকিয়েছিল। তরুণ মুহাম্মাদ (স.) এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গঠন করেন ‘হিলফুল ফুজুল’ ন্যায়পরায়ণদের জোট। তারা শপথ নেয়: ‘আমরা মক্কায় কোনো নির্যাতিত ব্যক্তিকে সহায়তা চাইলে তার পাশে দাঁড়াবো—সে মক্কার হোক বা বিদেশি।’

পরবর্তীতে রাসুল (স.) স্মৃতিচারণ করে বলেছিলেন, ‘আমি এমন এক চুক্তিতে অংশ নিয়েছিলাম, যা আমার কাছে লাল উটের চেয়েও প্রিয়। যদি ইসলাম আগমনের পরও আমাকে এ কাজের জন্য আহ্বান করা হতো তবে আমি সাড়া দিতাম। (খাতামুন নাবিয়্যিন, পৃষ্ঠা ১৩৫)

২. বিদেশির প্রাপ্য আদায়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ

আবু জাহেল এক বিদেশির উট কিনে দাম দিতে অস্বীকার করলে, নির্যাতিত ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে সাহায্য চান। নবী করিম (স.) নিজেই আবু জাহেলের দরজায় গিয়ে তাঁর কাছে উটের দাম আদায় করে দেন। (দালাইলুন নুবুওয়াহ, পৃষ্ঠা ১৬৬)

৩. দুর্বলদের অধিকার আদায় না করলে মুক্তি নেই

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, আল্লাহ সেই উম্মতকে কিভাবে গুনাহ থেকে মুক্ত করবেন, যাদের সবলদের থেকে দুর্বলদের প্রাপ্য আদায় করে দেওয়া হয় না। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪০১০) এই হাদিস শুধু মানবাধিকার নয়, বরং নৈতিক ও সামাজিক জবাবদিহিতার ভিত্তি স্থাপন করে।

৪. গৃহকর্মীর প্রহার রোধে ঐতিহাসিক হস্তক্ষেপ

আবু মাসউদ আনসারি (রা.) একবার তার গৃহকর্মীকে প্রহার করছিলেন। তখন নবী করিম (স.) পেছন থেকে বললেন, ‘হে আবু মাসউদ! জেনে রাখো- আল্লাহ তোমার চেয়ে তার ওপর বেশি ক্ষমতাবান।’ আবু মাসউদ (রা.) সঙ্গে সঙ্গে দাসটিকে মুক্ত করে দেন। তখন রাসুল (স.) বললেন, ‘যদি তুমি তাকে মুক্ত না করতে, জাহান্নামের আগুন তোমাকে স্পর্শ করত।’ (সুনানে আবি দাউদ: ৫১৫৯)

৫. এতিমের অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা

নবুয়তের আগে থেকেই রাসুল (স.) এতিমদের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। নিজেও ছিলেন এতিমের, তাই তাদের কষ্ট ছিল তাঁর হৃদয়ের গভীরে। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি ও এতিম প্রতিপালনকারী জান্নাতে এভাবে থাকব, তিনি তর্জনী ও মধ্যমা অঙ্গুলি দিয়ে ইঙ্গিত করেন। এবং এ দুটির মধ্যে তিনি সামান্য ফাঁক করেন।’ (বুখারি: ৫৩০৪) পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘এতিমের প্রতি কঠোর হবেন না।’ (সুরা দুহা: ৯)

এভাবে রাসুল (স.) সমাজে ইয়াতিমদের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

৬. নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিপ্লবী পরিবর্তন

জাহিলি যুগে নারীদের ছিল না কোনো মর্যাদা; কন্যাসন্তানদের জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো। রাসুলুল্লাহ (স.) এই অমানবিক প্রথা নির্মূল করেন এবং ঘোষণা দেন- ‘যে ব্যক্তি দুটি মেয়ে সন্তানকে সাবালক হওয়া পর্যন্ত প্রতিপালন করে, কেয়ামতের দিনে সে ও আমি এমন পাশাপাশি অবস্থায় থাকব, এই বলে তিনি তার হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে দিলেন। (সহিহ মুসলিম: ২৬৩১)

তিনি নারীদের উত্তরাধিকার, বিবাহে মতামত ও শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর যুগেই নারীরা শিক্ষিকা, ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

৭. দাসমুক্তি ও মানবমর্যাদার বিপ্লব

রাসুল (স.) দাসমুক্তিকে ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সওয়াবের কাজ হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘যার অধীনে দাস-দাসি থাকবে, সে যেন তাকে নিজে যা খায় তাকেও তা-ই খাওয়ায় এবং নিজে যা পরিধান করে, তাকেও তা-ই পরায়। তাদের ওপর এমন কাজ চাপিয়ে দিও না, যা তাদের জন্য অধিক কষ্টদায়ক। যদি এমন কষ্টকর কাজ করতে দাও, তাহলে তোমরাও তাদের সে কাজে সহযোগিতা করবে।’ (সহিহ বুখারি: ৩০)

৮. বয়স্কদের সম্মান দানে অনন্য উদাহরণ

একবার এক বয়স্ক সাহাবি মসজিদে প্রবেশ করলে রাসুল (স.) নিজে উঠে দাঁড়ান ও তাঁকে সম্মানের সঙ্গে পাশে বসান। তিনি বলেন, ‘যে লোক আমাদের শিশুদের আদর করে না এবং আমাদের বড়দের সম্মানের প্রতি খেয়াল রাখে না সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (তিরমিজি: ১৯২০)

এই শিক্ষা সমাজে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও মানবিক সহাবস্থানের ভিত্তি গড়ে দেয়।

রাসুলুল্লাহ (স.)-এর জীবন মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়ের এক জীবন্ত দলিল। তিনি নারী, দাস, এতিম, গৃহকর্মী ও বয়স্ক সব শ্রেণির দুর্বল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন কর্মের মাধ্যমে। আজকের বৈষম্যময় বিশ্বে তাঁর জীবনবোধই হতে পারে প্রকৃত মানবাধিকার রক্ষার সর্বোত্তম দিকনির্দেশনা।

আমার বার্তা/জেএইচ

নরমাল ডেলিভারির জন্য যেসব আমলে গুরুত্ব দিতে পারেন

নারীদের সন্তান প্রসবের প্রক্রিয়াকে ডেলিভারি বলা হয়। সন্তান প্রসবের জন্য সাধারণ দুটি পদ্ধতি হলো নরমাল

বিশ্বের প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে তামাক নিষিদ্ধের ঘোষণা দিল মালদ্বীপ

বিশ্বের প্রথম প্রজন্মভিত্তিক ধূমপান নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে মালদ্বীপে। এখন থেকে ২০০৭ সালের পর জন্ম নেওয়া

তুরস্কের যে মসজিদে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন ৬৩ হাজার মুসল্লি

তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সর্বোচ্চ চূড়ায় দাঁড়িয়ে আছে দেশটির সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে উঁচু মসজিদ চামলিজা

ইথিওপিয়ায় মুসলিমদের ঐক্য ও ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে আলেমদের ভূমিকা

খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইথিওপিয়ায় শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুসলিম পরিচয় ও সংস্কৃতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

 ‘বয়কট বয়কট-ফজলে হুদা বয়কট’ শ্লোগানে শ্লোগানে উত্তাল নওগাঁ-৩ 

সেন্টমার্টিন অঞ্চলে অবৈধ ট্রলিং বোটসহ ১৯ জেলে আটক

ডিসেম্বরের শুরুতেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে: সালাহউদ্দিন

কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান

রোববার থেকে সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা

শাহবাগে প্রাথমিক শিক্ষকদের সমাবেশ ছত্রভঙ্গে ডিএমপির ব্যাখ্যা

শাহবাগে প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ১২০

৫ দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি জামায়াতসহ ৮ দলের

কিছু দল নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতার স্বাদ নিতে চায়: মেজর হাফিজ

নীরবে কানাডা গেলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন

তারেক রহমানের দেশে আসার সময় জানালেন ফজলে এলাহী

প্রাসঙ্গিক থাকতে বিচার বিভাগকে অবশ্যই সংস্কার করতে হবে: প্রধান বিচারপতি

ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা শিক্ষকদের, জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

ফ্যাসিবাদগোষ্ঠি নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করলে জনগণই প্রতিরোধ করবে: আইজিপি

কলম বিসর্জন দিতে শহীদ মিনার থেকে শাহবাগে যাচ্ছেন শিক্ষকরা

পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে আমদানির সুপারিশ ট‍্যারিফ কমিশনের

শিক্ষকদের আন্দোলনে পড়াশোনার ক্ষতি হলে কঠোর ব্যবস্থা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

দুই কোটি টাকা দিয়ে নিবন্ধন পেয়েছে ডেসটিনির আম জনগণ পার্টি: তারেক

রাজনীতি স্থিতিশীল থাকলে অর্থনীতি আরও ভালো চলবে: গভর্নর

আসিয়ান: উচ্চশিক্ষা ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে পুত্রজায়া